স্থানীয় ধুলিয়ানী ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামের মামুন হোসেন বলেন, ‘বাবার কাছে শুনেছি, আগে এই সময়ে কপোতাক্ষ ভরা থাকতো। এখান থেকে পানি তুলে ইরি ধানের জমিতে পানি সেচ দিতো। কিন্তু এখন নদীর মাঝে আমরা প্রতিদিন ক্রিকেট খেলি।’
কপোতাক্ষের ওপর শহরের বড় ব্রিজের পাশে বাস করা সত্তরোর্ধ্ব আমজাদ হোসেন বলেন, ‘নদের দুপাশ দখল হয়ে গেছে। এখন এ নদ দেখে বোঝার উপায় নেই যে একসময় তা খরস্রোতা ছিল।’
ধীরেন নামের এক জেলে বলেন, ‘এক সময় কপোতাক্ষ থেকে মাছ বিক্রি করে আমার সংসার চলতো। ধীরে ধীরে কপোতাক্ষ নদের এই পরিবর্তন আমরা নিজ চোখে দেখছি। কি দেখলাম আর কি হলো! ট্যাংরা, বোয়াল, শিং, কৈ, টাকিসহ কতোরকমের মাছ ছিল এই নদীতে। নদের এমন অবস্থা নিজেরই বিশ্বাস হয় না।’
কপোতাক্ষ নদ নিয়ে প্রায় ১৩ বছর ধরে আন্দোলন করছে চৌগাছা সরকারী শাহাদাৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল জলিল।
তিনি বলেন, ‘কপোতাক্ষকে আজ থেকে ১০০ বছর আগেই মেরে ফেলা হয়েছে। নদীর উজান সংযোগ বন্ধ হয়ে আছে প্রায় ১০০ বছর ধরে। উৎসমুখ যদি বন্ধ থাকে তাহলে সেটি আর নদী বলা যায় না, এটি একটা বদ্ধ জলাশয়। এখন বৃষ্টির পানি ছাড়া কপোতাক্ষের পানির আর কোনো উপায় নেই।’
নদী গবেষক এবং চৌগাছা সরকারি কলেজের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘শুনেছি কপোতাক্ষ ড্রেজিং করা হবে। তাহলে কিছু খনন হবে, কিছু মানুষ রাষ্ট্রের টাকাপয়সা লুটেপুটে খাবে। কয়েক বছর থাকবে তারপর আবার পলি এসে ভরাট হয়ে যাবে। সেজন্যে আমরা বলছি, উজানে নদী সংযোগটি দিলে পদ্মার পানি আমরা পাবো এবং পদ্মার পানি পেলে নদী স্বয়ংক্রিয়ভাবেই খনন হয়ে যাবে।’